Thikana News
০৯ মে ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫

নির্বাচনী ডামাডোলে সরগরম বাংলাদেশ

নির্বাচনী ডামাডোলে সরগরম বাংলাদেশ

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট এখন সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। বাংলাদেশে এখন শুরু হয়ে গেছে নির্বাচনী ডামাডোল। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পূর্বে রাজপথের আন্দোলনের যারা ছিলেন ফ্রন্টফুটে। তফসিল ঘোষণার পর তারা এতটাই এখন ব্যাকফুটে যে, তাদের অস্তিত্বই খুব বেশি কিছু অনুভব করা যায় না। তারা আন্দোলনে আছে। হরতাল-অবরোধও দিয়ে যাচ্ছে। দু-একটা বাস-ট্রাকও পুড়ছে। দৌড়ের উপর দু-চারজনের মিছিলও চোখে পড়ে। সেসব মিছিল আবার চোখের পলকে মিলিয়েও যায়। দেখে মনে হয়, পেছন থেকে তাদের বুঝিবা কেউ তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
এখন ফ্রন্টফুটে তবে কারা আছে বাংলাদেশে? অবশ্যই যারা এখন নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছে। তাদের পদচারণায় সরগরম বাংলাদেশের রাজনীতি। এবং বহুদিন পর মনে হচ্ছেÑ বাংলাদেশে নির্বাচনী মাঠের প্রকৃত চেহারা অনেকটাই ফিরে এসেছে। মাঠের আন্দোলনে যারা ছিলেন, তাদের মধ্য থেকে অনেকেই নির্বাচনে ফিরে এসেছেন। আন্দোলনের মাঠে তারাই ছিলেন স্লোগানে, ভাংচুরে, আগুন সন্ত্রাসে অধিকতর স্বোচ্চার।
তারা এখন সবাই নির্বাচনী মাঠে দৌঁড়াদৌঁড়িতে ব্যস্ত। দলে দলে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন অফিসে। দৌঁড়াদৌঁড়ি করছেন এ দলের অফিসে, ও দলের অফিসে। নির্বাচনী মনোনয়নে একটা জায়গা বা একটু আশ্বাস পাওয়ার জন্য। অনেকে ঢাক-ঢোলসহ নানা বাদ্য বাজিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঢাকা আসছেন, দলের মনোনয়ন নিয়ে তা জমা দেয়ার জন্য।
যাদের মনে করা হতো, তারা কোনদিনই আর তাদের দাবি পূরণ হওয়ার পূর্বে নির্বাচনমুখী হবে না, তারাও এখন অনেক সাথী আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ তখমা পেয়েও নির্বাচনী লাইনে দাঁড়িয়ে গেছেন।
আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, আলেম-ওলামাদের বিভিন্ন দল জাতীয় জনকল্যাণ পার্টি, জাসদ-বাসদ, রব-মান্নাÑ সবাই নাকি নৌকায় একটু স্থান পাওয়ার জন্য হাঁটু পানি পর্যন্ত নেমে পড়েছেন। অভিজ্ঞজনদের অভিমত, নির্বাচনে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে চাপ এতটাই যে, নির্বাচনের বাইরে থাকার মত পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়ার সাহস আর তেমন কেউ পাচ্ছেন না। নৌকায় এখন ঠাঁই নাই, ঠাঁই অবস্থা। আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে ২৯৮ আসনের প্রার্থীর নাম প্রকাশ করে দিয়েছে। জাপা দিয়েছে ২৮৯টি আসনের প্রাথী।
তবে এ কথা একেবারে মনে করা যাবে না যে, মানুষের মন থেকে সব আতঙ্ক-দুর্ভোগ দূর হয়ে গেছে। জনসাধারণের মনে আতঙ্ক-দুর্ভোগ আছে। নির্বাচন বিরোধী আন্দোলন যতই দুর্বল হোকÑ মানুষ একেবারে দুশ্চিন্তা মুক্ত হতে পারছে না। যারা দিন আনে দিন খায়Ñ তাদের অনেকেরই আয়-রোজগার বন্ধ। নিম্ন আয়ের মানুষেরা চরম বিপাকে আছেন। হরতাল-অবরোধের কারণে পণ্যের উৎপাদন এবং সরবরাহ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের ব্যবসাও চরম সংকট মোকাবিলা করছে। অসুস্থ মানুষের চিকিৎসাও চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ থাকছে। পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা চালু রাখতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা রীতিমত আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।
এতশত নেতিবাচক পরিস্থিতি এবং আতঙ্কের মধ্যে মানুষ নির্বাচন নিয়ে মেতে উঠেছে। বাংলাদেশের নির্বাচনের এটাই আসল চরিত্র। নির্বাচন মানেই উৎসব-আনন্দ। গ্রামীণ দোকান-পাটও নির্বাচনী উৎসবে মেতে ওঠে। চা-বিস্কুট, বিড়ি-সিগারেটের বিক্রি যায় বেড়ে। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে যাবে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকা। নেতা-নেত্রী, প্রার্থীর ছবিতে একাকার হবে বিভিন্ন পোস্টার। ভোট দেবে না যত মানুষ, তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ ভোটের কার্যক্রমে যোগ দিয়ে জমিয়ে তুলবে নির্বাচন। নির্বাচনের দিন পর্যন্ত থাকবে এই ছবি। নির্বাচনবিরোধী আন্দোলন ম্লান হয়ে যাবে নির্বাচনী আমেজের কাছে।
 

কমেন্ট বক্স